জাবি শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সাজেশনের নামে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফসানা হকের বিরুদ্ধে প্রথম বর্ষের ২টি কোর্সের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ জানিয়েছেন এক শিক্ষার্থী।
গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর এ অভিযোগ দায়ের করা হয়। তবে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী নিজের নাম-পরিচয় উল্লেখ করেননি।
পরে অভিযোগপত্র ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের কথোপকথন সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগপত্র ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট মারফত জানা যায়, ৫২ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী সহযোগী অধ্যাপক আফসানা হকের নিকট "পপুলেশন স্টাডিজ" কোর্সের পরীক্ষার সাজেশন চাওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি ৪ সেট প্রশ্ন সাজেস্ট করেন। পরবর্তীতে প্রশ্নগুলো ক্রমিক নাম্বারসহ হুবহু পরিক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে মিলে যায়। এছাড়া "পরিসংখ্যান" কোর্সের জন্য ৬টি প্রশ্ন সাজেস্ট করলে সেগুলোর প্রতিটিই ক্রমিক নাম্বারসহ পরিক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিলে যায়।
শিক্ষার্থী অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, আফসানা ম্যাম পরীক্ষা কমিটিতে ছিলেন। উনি যে সাজেশন দিয়েছেন, তা পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। এটা তদন্তের দাবি রাখে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘উনি যেহেতু বিভাগেরই শিক্ষক, সেজন্য প্রশ্নের বিষয়ে উনার ধারণা থাকতেই পারে। কিন্তু উনার সাজেশনের প্রত্যেকটা মেইন প্রশ্নের অর্ডার এবং সাব-প্রশ্নের অর্ডার হুবুহু মিলে যায়। অথচ তিনি কোর্স টিচার নন। তবে পরীক্ষা কমিটিতে তিনি ছিলেন।’
এদিকে সামাজিক মাধ্যমে আফসানা হকের বিপক্ষে কথা বলতে দেখা যায় একদল শিক্ষার্থীকে। বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘ড. আফসানা হক প্রত্যেক ব্যাচকেই নানারকম অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে নিজের অনুগত করেন। পরবর্তীতে একটা নির্দিষ্ট গ্রুপকে আরও কিছু বিশেষ সুবিধা দিয়ে নিজের লাঠিয়াল হিসেবে গড়ে তোলেন।’
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
অভিযোগের ব্যাপারে ড. আফসানা হক বলেন, ‘এখানে প্রশ্নফাঁসের কিছু নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক বছরের প্রশ্ন এনালাইসিস করলেই কমন পাওয়া যায়।’
সাজেশন এবং পরীক্ষার প্রশ্নের ধারাবাহিকতা কীভাবে মিলে গেল জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন তো অধ্যায়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই করা হয়। আর আমি সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই সাজেশন দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানার জন্য নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আনিসা নূরী কাঁকনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো: শামছুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত চলা অবস্থায় কোনো বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘ওই বিভাগের জন্য আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরকম যত অভিযোগ আসবে, সবগুলোই ওই কমিটিতে দেওয়া হবে।’