ঋণ দুর্নীতি /
সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডিসহ ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের দুর্নীতির মামলায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন-ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, এজিএম সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান, ডিজিএম সফিজ উদ্দিন আহমেদ, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আ. জলিল শেখ, পরিচালক রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলী।
দণ্ডিতদের মধ্যে প্রথম সাতজনের বিশ্বাস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিন বছর করে কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
শেষের চারজনকে বিশ্বাস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। রায়ে অর্থদণ্ড রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আর একই সঙ্গে প্রতারণার প্রত্যেক আসামির সাত বছর করে কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশও দেওয়া হয়েছে।
দুই ধারার সাজা `একটির পর একটি চলবে' মর্মে রায়ে আদেশ দিয়েছেন আদালত। সে ক্ষেত্রে তাদের ১০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফকির মো. জাহিদুর ইসলাম বলেন, রায়ের সময় চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সাত আসামি পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলা থেকে জানা গেছে, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর তাজুল ইসলাম, আ. জলিল শেখ, রফিকুল ইসলাম এবং মীর মোহাম্মদ শওকত আলীকে সোনালী ব্যাংক হোটেল শেরাটন শাখা থেকে প্রি শিপমেন্ট ক্রেডিট বাবদ ১০টি এলসি/কনট্রাক্টর প্রদর্শন করে এর বিপরীতে ১৪টি পিসির মাধ্যমে ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ১৭ মে পর্যন্ত মঞ্জুরীকৃত পিএসসি লিমিট ৩০ লাখ টাকার বিপরীতে এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩ টাকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৪১৫ টাকা সমন্বয় করা হয়। অবশিষ্ট এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা সমন্বয় করা হয় না। খান জাহান আলী সোয়েটার্স লি. এর কর্মকর্তারা ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবৈধ সহযোগিতায় এ টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ২০১৪ সালের ২২ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা কমিশনের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ৬১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।