মায়ামিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রজতজয়ন্তী উদযাপন
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, মায়ামি মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রজতজয়ন্তী উদযাপন করেছে।‘টেকসই উন্নয়নের জন্য ভাষা’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রজতজয়ন্তী উদযাপিত হয়।
এ উপলক্ষে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শতাধিক স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশি, বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ফ্লোরিডা আটলান্টিক ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অফ মায়ামি-এর বাংলাদেশি শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং ফ্লোরিডাস্থ বাংলাদেশি বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
দিনের কার্যক্রম শুরু হয় কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে সব কর্মকর্তা-কর্মচারিদের উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে কনসাল জেনারেলের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে।
বিকেলে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে কনসাল জেনারেল ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা সমবেত কণ্ঠে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সঙ্গে সঙ্গে কনস্যুলেটে স্থাপিত শহিদ মিনারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে ভাষা শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
এরপরে বায়ান্ন’র ভাষা আন্দোলনের শহিদ এবং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে ঢাকা থেকে প্রেরিত দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বি এম গোলাম কিবরিয়া ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং এর ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তুলে ধরেন।
মায়ামি ডেড কলেজের ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ডিপার্টমেন্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সামিলা সসিক মাতৃভাষা শিক্ষার গুরুত্ব এবং একটি টেকসই সমাজব্যবস্থা ও টেকসই উন্নয়নে মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়তার উপরে আলোকপাত করেন। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক ইমরান চাকলাদার প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য প্রদান করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সমবেত কণ্ঠে ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা’ গানটি পরিবেশন করেন। আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিবৃন্দ তাদের নিজ নিজ ভাষায় ( তুর্কি, চীন, থাই, কোরিয়া, বসনিয়া- হার্জিগোভিনিয়া) শুভেচ্ছা বার্তা দেন এবং কবিতা ও গান পরিবেশন করেন।
কনসাল জেনারেল সেহেলী সাবরীন তার সমাপনী বক্তব্যে সকলকে ধন্যবাদ দেন এবং একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলের সহায়তা কামনা করেন।
এ ছাড়া তিনি আগামী প্রজন্মকে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে জানানোর জন্য তাদের মা-বাবার প্রতি অনুরোধ করেন।
সবশেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।