ওমরায় নিয়ে এজেন্সির বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ

ঢাবি প্রতিবেদক
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:১১
শেয়ার :
ওমরায় নিয়ে এজেন্সির বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ

ওমরা পালন করতে মক্কা ও মদিনায় নিয়ে গিয়ে আবাসন, পরিবহণ ও আর্থিক হেনস্তাসহ নানাধরনের হেনস্তা করছে এজেন্সিগুলো। এতে ওমরা ও হজ্জ পালন করতে যাওয়া মানুষেরা পড়ছে মারাত্মক সংকট ও বিপাকে। এমনিতেই অভিযোগ এনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রিন্সিপ্যাল এডমিনিস্ট্রেট অফিসার সৈয়দা খাদিজা বেগম। 

গতকাল রবিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে তিনি একথা বলেন। এ সময় এর বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে হজ্জ ও ওমরার সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানান তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, ভুক্তভোগী এই নারী প্রথমে ‘মুজদালিফা’ নামের একটি হজ্জ এজেন্সির মাধ্যমে এক লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা জমা দিয়ে ওমরা করার সমস্ত প্রস্তুতি নেন। তবে বাংলাদেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার পরে ওই এজেন্সি ‘মা আম্বিয়া ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস’ নামে অন্য আরেকটি এজেন্সির কাছে তাদেরকে বুঝে দেয়। পরবর্তী সময়ে ভিন্ন ভিন্ন এজেন্সির সাথে থাকতে বাধ্য করা হয়৷ 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত ৯ জানুয়ারি দুপুরে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে আমি সৌদি এয়ারে ঢাকা ত্যাগ করি। জেদ্দায় পৌঁছাতে রাত হয়ে যায়। সে সময় এক মোয়াল্লেম আমাদের একটি বাসে নিয়ে উঠায়। সেখান থেকে ভোগান্তির শুরু হয়। বাসে উঠা মাত্রই পাসপোর্ট নিয়ে রেখে দেয় এবং বাস ভাড়া দাবি করে। পরে জোর করে বাসভাড়া নেয়। এছাড়াও পাসপোর্ট আটকে রাখে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুধু তাই নয়, খাবার খাওয়ানোর ক্ষেত্রে টাকা বাঁচানোর চেষ্টায় একেবারে নিম্নমানের খাবার দেয় এজেন্সিগুলো। মক্কায় তুলনামূলক ভালো খাবার দিলেও মদিনায় অধিক লাভের আশায় খারাপ খাবার দেয়। এছাড়াও ওমরায় গাইড হিসেবে থাকা মুয়াল্লিম নিজের মর্জি মতো আমাদের প্রয়োজনীয় জায়গাগুলোতে নিয়ে যায়। এমনও হয়-প্রচণ্ড রোদের মধ্যে আমাদের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। অথচ ওই স্থানে তুলনামূলক কম রোদের সময়ও নিতে পারত৷’ 

এজেন্সির সহায়তায় ওমরা করতে গিয়ে ইবাদতের পরিবর্তে অতিরিক্ত চিন্তা করতে হয় জানিয়ে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমাদের বলা হয় হেরেম শরীফের একদম পাশে বাসা দেবে। কিন্তু গিয়ে দেখি অনেক দূরে একটি গলির ভেতরে বাসা দেয়। এছাড়াও এমন বাসায় দেয় যেখানে তিনজনের থাকার কথা৷ কিন্তু আমাদের পাঁচজনকে এক রুমে রাখে। মহিলাদের ওয়াশরুম বিড়ম্বনাতেও পড়তে হয় এজেন্সিগুলো অব্যবস্থাপনার কারণে।’

সংবাদ সম্মেলনে খাদিজা বেগম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে হজ্জ এজেন্সি দ্বারা যাত্রীদের প্রতারণার প্রতিকারের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘হজ্জ এজেন্সিগুলোর ভুয়া লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। এক এজেন্সির মানুষ অন্য এজেন্সি নিতে পারবে না মর্মে কঠোর নিয়ম প্রণয়ন করতে হবে।’

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত হজ্জ এসেন্সি ‘মুজদালিফা’র পরিচালক হাবিবুর রহমানের মুঠোফোন নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

এদিকে ‘মা আম্বিয়া ট্যুরস্ এন্ড ট্রাভেলস’-এ যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘একজন বা একটি প্রতিষ্ঠানের অধীনে একাধিক এজেন্সি পারিচালনা করা হয়।’ তবে যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিটিংয়ে আছেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।