‘শেখ হাসিনা অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিল’

অনলাইন ডেস্ক
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৩৩
শেয়ার :
‘শেখ হাসিনা অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিল’

বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেছেন, ‘একুশের চেতনায় উজ্জীবিত হয়েই দেশের ছাত্র-জনতা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। আওয়ামী সরকার প্রধান শেখ হাসিনা নিজেকে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারি মনে করতেন। নির্বিচারে গুম খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে জাতির কাছে তিনি অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছিলেন।’

আজ রবিবার এফডিসিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও একুশের চেতনা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন।

বাংলা একাডেমির সভাপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনসহ সব প্রতিষ্ঠানই শেখ হাসিনার একক নির্দেশে পরিচালিত হতো। যার ফলে হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্ট তার মর্যাদা হারিয়েছিল। দীর্ঘদিনের অপশাসন, অন্যায়-অত্যাচার ও দুর্নীতির কারণে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার যোগ্যতা হারিয়ে গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। টর্চার সেলে বহু মানুষকে বন্দি রেখে ঠান্ডা মাথায় নির্যাতন করা ছিল বিগত সরকারের একটি বড় অপরাধ।’

তিনি বলেন, ‘এ ধরণের অপরাধে দন্ডিতদের বিচারে ফাঁসিও হতে পারে। দেশবাসী আশা করে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করা উচিৎ।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যত মানুষ শহীদ হয়েছে তার চাইতে বহু মানুষ শহীদ হয়েছে জুলাই বিপ্লবে আওয়ামী সরকারের পুলিশ ও গুন্ডাবাহিনীর গুলিতে। বাংলাদেশের ইতিহাসে দৃশ্যমানভাবে গুলি করে এরকম হত্যাকান্ড আর কখনো ঘটেনি। তাই জুলাই বিপ্লবসহ আওয়ামী শাসনামলে গত ১৫ বছরের সকল গুম-খুন, হত্যার বিচার যতদ্রুত করা যাবে ততই সাধারণ মানুষের আইনের শাসনের প্রতি আস্থা বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে যাবার পর দেশ এখন গণতন্ত্রের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। দেশের এই সংকটকালে ছাত্র-জনতাসহ বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তা না হলে দেশি বিদেশি অপশক্তিগুলো অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে জুলাই বিপ্লবে অর্জিত সুফলকে ব্যর্থ করার অপচেষ্টা করতে পারে। জুলাই বিপ্লবের শহীদদের রক্ত দান বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মধ্যে আদর্শগত মতপার্থক্য থাকতে পারে। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য্য। কিন্তু আদর্শগত মতপার্থক্য হানাহানির পর্যায়ে গেলে পতিত রাজনৈতিক গোষ্ঠি সুবিধা পাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পতিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবসময় মনে করতেন আমিই রাষ্ট্র, এই স্টেটটি আমার। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে জুলাই হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা ও তার লেসপেনসাররা অনেকেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও লাখো লাখো নেতাকর্মীদের কথা একটুও ভেবে দেখেননি তারা। ফলে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। অথচ পরাজিত আওয়ামী লীগের কিছু কিছু লোক দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিদেশে বসে উস্কানিমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। দেশি বিদেশি এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করা না গেলে একুশের চেতনা ও জুলাই বিপ্লবের যে স্প্রিট তা ব্যাহত হবে।’

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে একুশের চেতনা বৃথা যায়নি’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সেন্ট যোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।