সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন

আদালত প্রতিবেদক
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫৫
শেয়ার :
সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন

আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক, অবিচারিক সুলভ আচরণ, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচারের অভিযোগে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমকে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার ও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন জানিয়েছে ঢাকা আইনজীবী সমিতি।

ঢাকা আইনজীবী সমিতির বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ আবেদন গতকাল বুধবার প্রধান বিচারপতির দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। যা আজ বৃহস্পতিবার জানা গেছে।

আবেদনে বলা হয়, এশিয়ার বৃহত্তম বার এসোসিয়েশন ঢাকা আইনজীবী সমিতির বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩১ হাজার ৩৫৯ জন। সম্প্রতি যোগদানরত সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম প্রতিনিয়ত জুনিয়র আইনজীবীদের মামলা শুনানিকালে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য,অসৌজন্য অবিচারিক সুলভ, অযাচিত বক্তব্য প্রদান এবং বিচারপ্রার্থীদের প্রকাশ্য আদালতে গালমন্দ অশ্লীল বক্তব্য ও অবিচারিক আচরণ করতে থাকিলে তার বিরুদ্ধে ঢাকা আইনজীবী সমিতি সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র ও সাধারণ বিজ্ঞ আইনজীবীদের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বার এসোসিয়েশন ও বেঞ্চের মধ্যে আদালত অঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার উদ্দেশ্যে গত ফেব্রুয়ারি ঢাকা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি পাঠিয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে আলোচনার জন্য অনুরোধ করা হয়। 

কিন্তু বিচারিক নুরে আলম ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা আলোচনা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে পরের দিন গত ১০ ফেব্রুয়ারি এডিসি, প্রসিকিউশন ডিএমপি নাসির আহমেদ হাওলাদার ও এসি প্রসিকিউশন ডিএমপি হাসান রাশেদ পরাগ সাহেবের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে আদালতের এজলাসে শুরু করেন। 

অতঃপর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলমের এহেন আচরণের সংবাদ পেয়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির কতিপয় কর্মকর্তা ওই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে বিচারক নুরে আলমকে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইতে তিনি প্রথমেই বলেন,‘আমি কি ঢাকা আইনজীবী সমিতির চাকরি করি? কেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কমিটির সঙ্গে আমার কথা বলতে হবে। আমি চাকরি না করলেও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাকের সঙ্গে কথা বলব না।’ 

এই বলে পুলিশকে আদেশ দেন, ‘এই পুলিশ ওদেরকে (আইরজীবীদের) বের করে দাও।’

বিচারক নুরে আলম সাহেব নিজে বিভিন্ন ধরনের উসকানিমূলক অশ্রাব্য ভাষা ও আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি ব্যবহার করে উপস্থিত আইনজীবীদের উত্তেজিত করতে তার পরিহিত ড্রেসের কোর্টে হাতা উপরের দিকে টেনে মারমুখী হয়ে উঠে গুলি করতে বললে কোর্টে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।

অতঃপর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরে আলম সাহেব বিভিন্ন অসত্য তথ্য ও এজলাসের আংশিক ভিডিও বেআইনিভাবে যমুনা টিভির মাধ্যমে অপপ্রচার করিয়া বিজ্ঞ আইনজীবীদের ভাবমুর্তি ক্ষুণ্ন করে সাধারণ বিচারপ্রার্থী ও বাংলাদেশের মানুষসহ সারা বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার হীন লক্ষ্যে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের সব সদস্য ও আইনজীবীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হীন উদ্দেশ্যে প্রয়াস চালাচ্ছে। যা বিচার বিভাগের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়। 

চিঠিতে বিচারক নুরে আলমের অসৌজন্যমূলক, অযাচিত ও অশ্লীল বক্তব্য এবং অসত্য অপপ্রচার অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রার্থনা জানানো হয়।