রাবিতে মুজিব পরিবারের নাম মুছে দিল আন্দোলনকারীরা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) নির্মাণাধীন দুটি আবাসিক হলসহ মোট চারটি আবাসিক হল এবং শেখ রাসেল স্কুল মডেল স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ড. শামসুজ্জোহা চত্বরে মিলিত হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে পর্যায়ক্রমে চারটি হল ও স্কুলে গিয়ে নেমপ্লেট, উদ্বোধনী ফলকে ভাঙচুর করেন। রাত ১১টার দিকে কর্মর্সূচিটি শেষ হয়।
নামফলক ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম দেওয়া হয়েছে বিজয়-২৪ হল, নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামরুজ্জামান হলকে শহীদ আলী রায়হান হল ও শেখ হাসিনা হলের নাম দিয়েছেন ফাতিমা আল-ফিহরিয়া, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলকে নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হল এবং শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নামফলকও ভাঙচুর করে রিয়াগোপ মডেল স্কুল নাম দেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই’, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ, মুজিববাদ মুর্দাবাদ’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘আমার সোনার বাংলায়, মুজিববাদের ঠাঁই নাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাত ৯টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ড. শামসুজ্জোহা চত্বরে মিলিত হতে শুরু করেন।পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে উপস্থিত হন।এ সময় তারা হলটির নামফলক, উদ্বোধনী ফলকসহ শেখ মুজিবের চিহ্ন সম্বলিত স্থাপনাগুলো ভেঙে দেন।পর্যায়ক্রমে নির্মাণাধীন এ এইচ এম কামারুজ্জামান হল ও শেখ হাসিনা হলের নামফলক ভেঙে দেন।
এরপর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হলের নামফলক ভেঙে নতুন নাম দিতে গেলে ওই হলের আবাসিক কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিপত্তি সৃষ্টি হয়। ওই কয়েকজন ছাত্রী ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সেখানে ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ির ঘটনাও ঘটে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সরে আসলে প্রক্টরের উপস্থিতিতে হলের ছাত্রীরা নামের ব্যানার আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেন। সর্বশেষ শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নামফলকও ভাঙচুর করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবির অন্যতম সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, ‘আমার ভাইদের রক্তে রঞ্জিত রাজপথ শুকানোর আগেই খুনি হাসিনা পুনরুজ্জীবিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী শিক্ষার্থীরা খুনি হাসিনার সাংস্কৃতিক বিচরণ মুছে ফেলতেই এ কর্মসূচি পালন করলাম।’
সার্বিক বিষয়ে রাবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আজকে যা যা হয়েছে, তার সঙ্গে প্রশাসনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আর প্রশাসন যদি কোনো হলের নাম পরিবর্তনও করে, সেটা সিন্ডিকেট মিটিং-এ পাশ হয়ে তারপর পরিবর্তন হবে।’