জাবিতে ছাত্রদলের সদস্যসচিবকে পদবঞ্চিতদের ধাওয়া
ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সদ্যঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিককে ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আহ্বায়ক কমিটিতে পদবঞ্চিতরা এ ধাওয়া করেছেন বলে জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় একটি খাবার হোটেলের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাভারের পাথালিয়া ইউনিয়নে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা কয়েক নেতা-কর্মীকে বহিষ্কারের কারণ জানতে চাইলে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে অনিক তার কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক-জব্বার হল সংলগ্ন মোড়ে এসে জড়ো হন অনিকের সমর্থকরা। তারা মওলানা ভাসানী হল সংলগ্ন সড়কে আসলে কয়েকজন ধাওয়াকারীর সাথে পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করে ছাত্রদলের একাংশের নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সামনে থেকে শুরু করে ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর হয়ে বটতলা এলাকায় এসে শেষ হয়।
তবে এ ঘটনাকে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নয়, বরং ছাত্রলীগের হামলা বলে উল্লেখ করেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি মতবিনিময় সভা শেষে গেরুয়ার একটি হোটেলে বসে খাওয়া-দাওয়া করছিলাম। এ সময় মুখোশধারী কয়েক ছাত্রলীগ নেতা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা ক্যাম্পাসে মিছিল করি। আজকের ঘটনার সঙ্গে বহিষ্কারের কোনো সম্পর্ক নেই। ছাত্রলীগ তো আমাদের উপর হামলা করে। তারা ছাড়া আর কে করবে?’
আরেক ছাত্রদল নেতা নবীনুর রহমান নবীন বলেন, ‘কয়েকজনকে মাস্ক পরা অবস্থায় হাতে রামদা, মেশিন (আগ্নেয়াস্ত্র)সহ দেখতে পাই। এ সময় সদস্য সচিবকে মারতে আসছে বলে চিৎকার করে আমরা সবাই এগিয়ে আসলে ওরা পালিয়ে যায়।’
হামলাকারীরা ১৫ জনের মতো ছিল বলেও জানান নবীন। এতে কয়েকজন ছাত্রদল নেতাও ছিলেন বলে তার কাছে জানা যায়।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
পদবঞ্চিতদের একজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, ‘আমরা হাসিনা বিরোধী দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে সবসময় ছিলাম। তখন আমরা মিছিল মিটিংয়ে লোক ছিলাম মাত্র ১০ -১২ জন। অথচ যখন কমিটি দেওয়া হলো, ত্যাগীদের মূল্যায়নের নাম করে ১৭৭ জন রাখা হলো। এ কমিটি কী করে ত্যাগীদের মূল্যায়ন হয়? বরং ত্যাগীদের বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যেই এ কমিটি করা হয়েছে। আমরা ত্যাগীদের প্রকৃত মূল্যায়ন চাই।’
ধাওয়া দেওয়ার প্রসঙ্গে পদবঞ্চিত এক নেতা বলেন, ‘আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু উল্টো অনিক আমাদের হুমকি-ধামকি দেন। আমাদের বহিষ্কার ও দেখে নেওয়ার কথা বলেন। এরকম হলে আমরা বসে থাকবো?’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোনো অরাজকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে প্রশাসন সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। অছাত্ররা ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করলে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’