জার্মানিতে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার
জার্মানির রাজধানী বার্লিনের নয়াকোলনের একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন বাংলাদেশের কবি ও সাংবাদিক দাউদ হায়দার। তার অবস্থা অনেক সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন ভিভানটেস হাসপাতালের প্রধান শল্য চিকিৎসক ড. গুইলু কাটালডেগিরমেন।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার কবিকে সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার বেগতিক দেখে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করানোর পর আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘রোগীর অবস্থা দেখে ধারনা করছি সম্ভবত তিনি পড়ে গিয়ে মাথায় মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তার মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে জ্ঞান হারিয়েছেন। এখন কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমরা আমাদের সর্বোত্তম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, আজ দুপুর পর্যন্ত তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে।’
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
এর আগে বার্লিনের স্থানীয় পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ জানায়, কবি দাউদ হায়দারকে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
বার্লিনে কবি দাউদ হায়দার একা থাকতেন। স্ত্রী সন্তান কিংবা পরিবানের একান্ত কাছের কেউ না থাকায় তার খোঁজখবর পেতে খুব বেগ পেতে হয়েছে বলে জানান বার্লিনে কবির নিকটজন সংস্কৃতিকর্মী, শিল্পী মাইন চৌধুরী পিটু। তিনিই প্রথম কবির কোন খোঁজ না পেয়ে কমিউনিটির সবাইকে জানান। স্থানীয় পুলিশ ও হাসপাতালে গিয়ে কবির বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, ‘কবির ভাল-মন্দ, অসুখ-বিসুখ, সুখে-দুখে চেষ্টা করেছি কাছে থাকতে। কবির কোনো শত্রুও ছিল না। তিনিসহ বার্লিনের অন্যান কাছের স্বজনরা কবির শারিরীক সুস্থতার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খবরাখবর রাখছেন ‘
কবি ও সাংবাদিক দাউদ হায়দার দেশের ভাষা আন্দোলনের বছর ও মাস ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী পাবনা জেলার সদরের দোহারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তারপর থেকে তার লেখনির মাধ্যমে তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। কিন্তু তার লেখা ও কবিতার জন্যই ১৯৭৪ সালেই তাকে দেশ ছাড়তে হয়। সেসময় তাকে জার্মানির নোবেলজয়ী লেখক, কবি ও সাহিত্যক প্রয়াত গুইন্টার গ্রাস ও দেশটির তৎকালীন ভাইস চ্যান্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান্স ডিটরিখশ গেনশের জার্মানিতে নিয়ে আসেন। তারপর থেকেই কবি জার্মানির বার্লিনেই নির্বাসিত জীবনযাপন করছিলেন।