হাসপাতালে নেওয়ার পথে নোবিপ্রবি ছাত্রের মৃত্যু

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:২৪
শেয়ার :
হাসপাতালে নেওয়ার পথে নোবিপ্রবি ছাত্রের মৃত্যু

হার্ট অ্যাটাক করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ছাত্র মো. মোস্তফা তারেক মারা গেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন।

গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

মোস্তফা তারেকের গ্রামের বাড়ি নড়াইল জেলার আলাদাতপুর গ্রামে। পরিবারে তিনি ছিলেন বড় ছেলে, তার একমাত্র ছোট বোন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।

তার মৃত্যুতে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের একমাত্র অবলম্বনকে হারিয়ে সবাই দিশেহারা।

নিহতের সহপাঠীরা জানান, ফুটবল খেলে সিয়াম মালেক হলের একটি রুমে গিয়ে বিশ্রাম নেন। খেলায় সামান্য ক্লান্তি কাটাতে তিনি গোসল করতে যান। গোসল শেষে ফিরে এসে তার হালকা বুক ব্যথা শুরু হয় এবং তিনি শুয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে সিয়ামের শরীর নিস্তেজ হতে থাকে, চেহারায়ও মলিনতার ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

সহপাঠীরা আরও জানান, আগের থেকে থাকা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বিবেচনায় তাকে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ দেওয়া হয় এবং হাত-পায় মালিস করে আরাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

পরবর্তীতে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেটমোড় যাওয়ার পথে শিক্ষকদের একটি গাড়ি পেয়ে সিয়ামকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করে তারেক সিয়াম মারা গেছে বলে জানান নোয়াখালী সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি আরও বলেন, ‘তাকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে।’

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের চেয়ারম্যান জি এম রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি খুবই আন্তরিক ও ভদ্র ছেলে ছিল। আমি তাকে বিভিন্ন সংগঠনের ভলান্টিয়ার হিসেবে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ করতে দেখেছি। তার এই অকাল মৃত্যুতে আমরা পুরো শিক্ষা প্রশাসন পরিবার শোকাহত। আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ এফ এম আরিফুর রহমান বলেন,  ‘আমরা তার অসুস্থতার খবর শুনে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলি। ডাক্তার তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করার পর আমরা তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বিশ্ববিদ্যালয় হতে নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে নড়াইলে মরদেহ পৌঁছানোর জন্য ব্যবস্থা করেছি। সর্বশেষ শিক্ষক ও তার সহপাঠীদের সহযোগিতায় মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি আলাদাতপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। সর্বশেষ তার দাফন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘তারেক সিয়ামের অকাল মৃত্যুতে আমরা খুবই মর্মাহত। তার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করতে আমরা ইতিমধ্যেই ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। এই ঘটনার সুস্পষ্ট প্রমাণ এবং তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী পরিবহন পুল এবং মেডিক্যাল সেন্টারের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির গাফেলতির কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী আমরা সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিব। আমরা এখন থেকে ২৪ ঘন্টা অ্যাম্বুলেন্স সেবা নিশ্চিত করার জন্য ইতিমধ্যে ভাড়া গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্স ক্রয় করার চেষ্টা করব। পাশাপাশি আমরা ওষুধ ক্রয়ের জন্য আগের থেকে বাজেট দ্বিগুণ করে ওষুধ কেনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি।’