নাইকো মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ সব সাক্ষীকে তলব

আদালত প্রতিবেদক
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩:০৫
শেয়ার :
নাইকো মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ সব সাক্ষীকে তলব

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির নাইকো দুর্নীতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ সকল সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে তলব করেছেন আদালত।

 আজ রবিবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান দুদকের পক্ষে সময় আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর ফাতেমা খানম মিলা এদিন কোন সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির না হওয়ায় সময় আবেদন করেন।

অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষে এ মামলায় আইনজীবীরা মৌখিকভাবে সাক্ষী ক্লোজ করার আবেদন করেন। শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, ‘দুদক গত ৩টি ধার্য্য তারিখে সাক্ষী হাজির করেনি। এভাবে তারা আসামিদের হয়রানি করছেন। তাই মামলায় সাক্ষী ক্লোজ করে আসামিদের খালাস দেওয়া হোক। শুনানি শেষে বিচারক আগামী ১২ সেপ্টম্বর সকল সাক্ষীতে তলব করেছেন।’ যা আইনজীবী হান্নান ভুইয়া নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, মামলায় বাদীসহ ২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। যার মধ্যে বাদীর সম্পূর্ণ সাক্ষী হওয়ার পর বাপেক্সের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল বাকী আংশিক সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাই আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সাক্ষী হাজির না হলে আদালত খালেদা জিয়াসহ সকল আসামিকে খালাস দিতে পারেন। 

গত বছর ১৯ মার্চ একই আদালত খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির অব্যাহতির আদালত নাকচ করে চার্জগঠনের আদেশ দেন। 

অপর আসামিরা হলেন- তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দীন সিদ্দিকী,বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম । এদের মধ্য প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলা তদন্তের পর ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

চার্জশিটের বৈধতা চ্যলেঞ্জ করে খালেদা জিয়া হাইকোর্টে রীট আবেদন করলে ২০০৮ সালের ৯ জুলাই হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারী করেন। ২০১৫ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট রুল ডিচার্জ করে স্থাগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন।

ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ অভিযোগে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতির অভিযোগে মামলাটি করা হয়। 

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অর্থ আত্মসাতের দুর্নীতি মামলায় সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। তিনি ওইদিন মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর কারাগারে থাকাবস্থায় চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মামলায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেন আদালত। দণ্ডিত হওয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় একই বছর ৩০ অক্টোবর আপিলে হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার সাজা ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় দুই বছর জেলে থাকার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে দুটি শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়। বর্তমান অর্ন্তবতীকালিন সরকার গঠিত হওয়ার পর গত ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি দণ্ড মওকুফ করে তার মুক্তির আদেশ দেন।