মহানগর পিপি হিসেবে সমাজীকে মানবে না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে মানবে না বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ সলিসিটর মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে গত ২৭ আগস্ট সমাজীকে নিয়োগ প্রদান করা হয়। যা আজ বুধবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর এদিন দুপুরে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে নিয়োগ বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় অবিলম্বে এহসানুল হক সমাজীর নিয়োগ বাতিলের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানান তারা। তা না হলে তাকে এ দায়িত্বপালন করতে দেওয়া হবে না মর্মে হুমকি প্রদান করা হয়। তারা সমাজীকে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেতাত্মা বলে অভিহিত করেন। সেই সঙ্গে তারা মন্তব্য করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সুবিধা দেওয়ার জন্যই এ নিয়োগ হয়েছে।
উক্ত সমাবেশে ঢাকা আইনজীবী সমিতির বিএনপি দলীয় সাবেক সভাপতি বোরহান উদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকীকে নের্তৃত্ব দিতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, বিগত ১/১১-র তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এহসানুল হক সমাজী ২ বছর ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
আরও পড়ুন:
ভারত সফরে গেলেন প্রধান বিচারপতি
এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে সরিয়ে দিলে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ পান অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর দায়িত্বে ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আব্দুল্লাহ আবু আর আদালতেই আসেননি।
এহসানুল হক সমাজী একজন স্বনামধন্য ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির (ঈৎচঈ) কোড, টঘউচ- ইধহমষধফবংয-এর সংশোধনী সংক্রান্ত কাগজ তৈরির জন্য জাতীয় পরামর্শদাতা ছিলেন।
সমাজি ২০০৭-২০০৯ মেয়াদে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ঢাকার মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ছাড়াও বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তার মেয়াদে তিনি রাষ্ট্র/প্রসিকিউশনের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং ফৌজদারি আদালতে সমস্ত মামলা পরিচালনা করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালের এলএলবি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬ সালের ৩০ অক্টোবর একজন আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন। ওই বছরের ৪ নভেম্বর তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৮৮ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৯২ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সদস্যপদ লাভ করেন।
এহসানুল হক সমাজী কিছু চাঞ্চল্যকর মামলাসহ অসংখ্য ফৌজদারি মামলা পরিচালনা করেছেন। তিনি একজন ক্রিমিনাল প্র্যাকটিশনার হিসাবে অনুশীলন করতে উৎসাহিত বোধ করেন। তিনি অনেক প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির পার্ট-টাইম ফ্যাকাল্টি ছিলেন এবং ২০১৮ সাল পর্যন্ত ট্রায়াল এবং অ্যাডভোকেসি দক্ষতা শেখান। বর্তমানে তিনি দায়রা আদালত/বিশেষ জজ আদালত/ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন অনেক মামলায় সুনামের সাথে লড়াই করছেন