আতঙ্কে দেশে ফিরে যাচ্ছেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশে সংঘটিত কোটা আন্দোলন নিয়ে নানামুখি সংঘর্ষ ও সম্প্রতি কারফিউ জারি নিয়ে সারাদেশের মানুষ খুব আতঙ্কে দিন পার করছেন। এদেশের নাগরিকদের পাশাপাশি দেশে অবস্থানরত ভিনদেশি নাগরিকদের মনেও বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে চার হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফিরেছেন।
এদিকে যারা ফিরে যেতে পারেননি, তারা এখনও আতঙ্ক নিয়েই হোস্টেলে আটকে রয়েছেন।
ভারত ছাড়াও নেপাল, ভুটান, মায়ানমারের ছাত্রের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। তাদের বেশির ভাগ ছাত্রই এমবিবিএস পড়ার জন্য বাংলাদেশে এসেছেন। কেউ ফাইনাল ইয়ারে আবার কেউ মাত্রই প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছেন এদেশের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের বাসিন্দা সৌম্যদীপ চক্রবর্তীই মাস দেড়েক আগেই বাজিতপুরের জরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষের ছাত্র সৌম্যদীপ নিজের বাড়িতে ফিরেছেন রবিবার। এ প্রসঙ্গে সৌম্যদীপ জানান, তার চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছা ছোটবেলা থেকেই। কিন্তু সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়ার প্রতিযোগিতায় অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন তিনি। আর বেসরকারি কলেজে পড়ার মতো সামর্থ্য ছিল না।
তিনি আরও বলেন, ’ভারতে যে কোনও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে গেলে ৮০ লাখ টাকা দরকার। কোথাও কোথাও এক কোটি টাকাও লাগে। সে টাকা খরচের সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। তাই অনেকটা কম খরচে বাংলাদেশের মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ মিলে যায়।’
বীরভূমের নলহাটির মেয়ে তমন্না পরভিন। আতঙ্কের দিনরাত কাটানোর পর পাঁচ বন্ধু মিলে শনিবার রাতেই তারা পৌঁছে গিয়েছেন আগরতলায়।
কুমিল্লা ময়নামতী মেডিক্যাল কলেজের এই ছাত্রী জানালেন, ‘আগরতলা থেকে বাড়ি ফেরাও ছিল অনেক কষ্টের। আগাম টিকিট না-থাকায় রবিবার সকাল সোয়া ৮টায় শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ওঠেন। প্রায় ৩২ ঘণ্টার যাত্রার শেষে সোমবার বিকেলে বাড়িতে পৌঁছান তিনি।
বাবা জাহির হোসেন রামপুরহাট স্টেশনে মেয়েকে আনতে গিয়েছিলেন। ব্যবসায়ী জাহির বলেন, ‘ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল আমার মেয়ে। কিন্তু সরকারি মেডিক্যাল কলেজে সুযোগ না মেলায় খুব চিন্তা হয়েছিল। বেসরকারি কলেজে আমার কাছ থেকে এক কোটি পাঁচ লাখ টাকা চায়। শেষে অনেক কম খরচে বাংলাদেশের এই কলেজে ভর্তি করিয়েছি।’সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা