দোহায় বাংলা নববর্ষ ও রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন
ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি ও কাতারে বসবাসরত অন্যান্য কমিউনিটির সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব ১৪৩১ ও রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী কাতোরে অবস্থিত বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয় এই অনুষ্ঠানের। বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োন করা হয়।
দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজ প্রাঙ্গন বিভিন্ন রঙের ব্যানার, ফেস্টুন, বৈশাখী আলপনা, দেশীয় পালকি ও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। প্রবাসী বাংলাদেশি পরিবার, দোহাস্থ অন্য দেশের কমিউনিটির সদস্য, বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজ এর ছাত্রছাত্রী, শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের বাংলাদেশিগণ এবং দূতাবাসের সদস্যরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পোষাকে সজ্জিত হয়ে এতে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
এ উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের স্টলসমূহে বাংলাদেশি খাবার, মিষ্টান্ন, তৈজসপত্র, হস্তশিল্প, শাড়ি, মনোহরি দ্রব্য, অলংকার সামগ্রী, খেলনা এবং আল্পনা সহকারে বাংলাদেশকে ফুটিয়ে তোলেন। দূতাবাসের স্টলে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ঐতিহ্যবাহী দেশীয় পণ্যের প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়াও মেলায় দূতাবাস কর্তৃক কনস্যুলার সেবা দেওয়া হয়।
দূতাবাস পরিবার ও বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজনের মাধ্যমে দেশীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অতিথিদের সামনে তুলে ধরা হয়। ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’ গানটি সম্মিলিত কণ্ঠে পরিবেশনার মাধ্যমে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দোহাস্থ ভারতীয় বঙ্গীয় পরিষদ, কেরালা সাংস্কৃতি গোষ্ঠী, দূতাবাসের সদস্যরা, বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাংস্কৃতিক সংগঠন- বৈশাখী, রবীন্দ্র সংঙ্গীত, নজরুল গীতি, লোকজ সংগীত, কবিতা ও নৃত্য ইত্যাদি পরিবেশন করেন।
এর আগে, কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম দূতাবাসের কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ সর্বস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে বাংলা বর্ষবরণ ও রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম তার স্বাগত বক্তব্যে উৎসবে আগত অতিথিদের নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন সর্ম্পকে অবহিত করেন। তিনি উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি বিদেশের মাটিতে তুলে ধরার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ও জাতীয় কবি নজরুলের জীবন ও কর্ম সর্ম্পকে সংক্ষেপে আলোচনা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ তথা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গঠনে সকল প্রবাসীদের আরও বেশি অবদান রাখার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের দেশি ঐতিহ্যবাহী খাবার ও পিঠা দ্বারা আপ্যায়ন করা হয়।