ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে নববর্ষ উদযাপন

প্রবাস ডেস্ক
০৫ মে ২০২৪, ১০:২৯
শেয়ার :
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে নববর্ষ উদযাপন

ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার নববর্ষ উদযাপন ছাড়া দূতাবাস ‘পাসপোর্ট ডিসি’স অ্যাম্বাসি ট্যুর-২০২৩’ এর অংশ হিসেবে এক ‘ওপেন হাউস’ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।

বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গন থেকে ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি মিশন সংলগ্ন বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণের পর একই স্থানে এসে শেষ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাদের পরিবারের সদস্য ও আমন্ত্রিত অতিথিরা দেশীয় বাদ্যযন্ত্র, ঢোল, মুখোশ এবং বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জাম নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক শরিফা খান এবং বিপুল সংখ্যক বিদেশী অতিথি। একই সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও আনন্দঘন এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও তাদের সহধর্মিণীদের গাওয়া বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত গান ‘এসো, হে বৈশাখ, এসো এসো’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পরে বৃহত্তর ওয়াশিংটন মেট্রোতে অবস্থিত বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক দল ‘অপরাজেয় বাংলা’র শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সন্তানদের চমৎকার গান ও নৃত্য পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

রাষ্ট্রদূত ইমরান তার বক্তব্যে দেশবাসী, প্রবাসী বাংলাদেশি ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বাংলা নববর্ষ উদযাপনের বর্ণাঢ্য ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং জাতির সবচেয়ে সার্বজনীন উৎসব।’

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে মানবতার একটি বিমূর্ত ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে। তিনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি জাতির সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের সামনে যথাযথভাবে তুলে ধরতে আহ্বান জানান।

তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করার অনুরোধ জানান।

দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান উপভোগ করতে বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০ হাজার নাগরিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বাংলাদেশ দূতাবাস পরিদর্শন করেন। এ উপলক্ষে অতিথিদের জন্য ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার প্রদর্শন ও পরিবেশন করা হয়।

বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে জামদানি ও টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পের বেশ কয়েকটি স্টল স্থাপন করা হয়। দর্শনার্থীরা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে পোস্টার, লিফলেট এবং বই সংগ্রহ করেন যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, মহান ভাষা আন্দোলন এবং উন্নয়নের পাশাপাশি সমৃদ্ধ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং দর্শনীয় পর্যটন স্থানগুলোকে তুলে ধরে।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি আতাউর রহমান এবং এর সার্বিক সমন্বয়ে ছিলেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।