দুই মামলা থেকেই অব্যাহতি পেলেন জবির খাদিজা

আদালত প্রতিবেদক
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:২১
শেয়ার :
দুই মামলা থেকেই অব্যাহতি পেলেন জবির খাদিজা

যে দুই মামলায় ১৫ মাস কারাগারে থেকে জামিনে কারামুক্ত হয়েছিলেন, সেই মামলা থেকেই অব্যাহতি পেলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিউমার্কেট থানায় করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় চার্জগঠনের শুনানিতে ট্রাইব্যুনাল তাকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

চার্জগঠনের মতো কোনো উপাদান না থাকায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ অব্যাহতির আদেশ দেন। তবে মামলার আরেক আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের অংশটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি কলাবাগান থানার অপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে একই আদালত খাদিজাকে অব্যাহতি দেন।

অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। 

একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফ হোসেন। দুই বাদীই দায়িত্ব পালনকালে মোবাইল ফোনে ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর দুজনই নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।

২০২২ সালে মে মাসে দুই মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। সে চার্জশিট আমলে একই আদালত দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট মিরপুরের বাসা থেকে খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা-পুলিশ। ১৫ মাস আইনি লড়াইয়ের পর গত বছর ২০ নভেম্বর তিনি কাশিপুর কারাগার থেকে জামিনে কারামুক্ত হন। অথচ দুই মামলায় আদালত তাকে বিচার শুরু আগেই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে দিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষ মামলাগুলোয় খাদিজাকে কারাগারে আটক রাখতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে পর্যন্ত গিয়েছিল। মামলা দুটিতে নিম্ন আদালত দুবার খাদিজার জামিন আবেদন নাকচ করেন। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। 

গত বছর ১৬ ফেব্রুয়ারি তার জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়। 

অন্যদিকে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে খাদিজা আবেদন করেন। যা রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের সঙ্গে গত বছর ১০ জুলাই আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আপিল বিভাগ আবেদন শুনানি চার মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) করেন। ফলে এ সময় পর্যন্ত খাদিজার জামিন স্থগিত থাকে। আগের ধারাবাহিকতায় খাদিজার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা ‌‘লিভ টু’ আপিল গত বছর ১৬ নভেম্বর আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম শুনানি করেন। খাদিজার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস ও জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। শুনানি শেষে আদালত জামিন বহাল রাখেন। এরপর গত বছর ২০ নভেম্বর তিনি কাশিপুর কারাগার থেকে জামিনে কারামুক্ত হন।