ইস্তাম্বুলে মহান শহীদ দিবস পালন
ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল “মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪” যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে পালন করেছে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিনব্যাপী কর্মসূচির শুরু হয়। এরপর, কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নূরে-আলমের নেতৃত্বে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রভাতফেরির মাধ্যমে ভাষা শহীদদের স্মরণে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় ভাগে ইস্তাম্বুলে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা এবং তুরস্কের মিডিয়া ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনার শুরুতে ভাষা শহীদদের স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। এরপর, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন’ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হয়। প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর বিষয়ভিত্তিক আলোচনার আয়োজন করা হয়।
কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ নূরে-আলম তার বক্তব্যে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে জীবন উৎসর্গকারী সকল ভাষা শহীদ এবং ভাষা সৈনিকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সকল সংগ্রাম ও লড়াইয়ে নেতৃত্বপ্রদানকারী স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
কনসাল জেনারেল তার বক্তব্যে আরও বলেন, মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন এবং ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করার জন্য জীবন-উৎসর্গ পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক দিবসে পরিণত হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির ফলে আমাদের মহান ভাষা আন্দোলন বৈশ্বিক সম্পদে পরিণত হয়েছে, যা জাতি হিসেবে আমাদেরকে আরও সম্মানিত, গৌরবান্বিত ও মর্যাদাবান করেছে। কনসাল জেনারেল তুরস্কে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের অমর একুশের চেতনা ও প্রেরণাকে ধারণ ও লালন করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার আহ্বান জানান।
উন্মুক্ত আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং তুরস্কে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিকাশে তাদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ ব্যক্ত করেন। তারা কনস্যুলেটের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের প্রশংসা করেন। আলোচনার শেষে একুশের গান পরিবেশন ও কবিতা পাঠ করা হয় যা উপস্থিত দর্শকদেরকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানশেষে ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও বিশ্বশান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।