মিশরে শহিদ দিবস পালন
কায়রোর বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে। আজ বুধবার রাষ্ট্রদূত মিজ্ সামিনা নাজ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা জাতীয় সংগীত সহকারে উত্তোলন ও অর্ধনমিত করেন। এরপর দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে দিবসটির মূল কার্যক্রম শুরু হয়।
শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভাষা শহিদদের রুহের মাগফেরাত এবং প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। ভাষা শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরবর্তীতে দিবসটি উপলক্ষে প্রেরিত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও ভাষা আন্দোলন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত মিজ্ সামিনা নাজ বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু বাংলা ভাষাকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার সংগ্রাম নয়, একইসঙ্গে আত্মসচেতনতা সমৃদ্ধ জাতীয় জাগরণের অনুপ্রেরণার উৎস। জাতিসত্তা বিকাশে যে সংগ্রামের সূচনা সেদিন সূচিত হয়েছিল, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় পথ বেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙ্গালির কাছে চির প্রেরণার প্রতীক।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুখী, সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে দৃঢ় পদক্ষেপে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। গত ১৫ বছরে টেকসই উচ্চ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এ বছর বাংলাদেশ দূতাবাস, কায়রো দূতাবাস প্রাঙ্গণে দিবসটি পালনের পাশাপাশি আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি মিশরের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ প্রয়াসে মিশরের বিখ্যাত কায়রো অপেরা হাউজে ‘সাংস্কৃতিক সম্পর্ক’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছে এবং ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করবে। উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পর্যটন প্রভৃতির ওপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এ ছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে মিশরে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশে মিশরের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মিশরীয় একজন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উপস্থিত থাকবেন এবং বক্তব্য প্রদান করবেন। এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক বন্ধন জোরদারকরণের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার উন্মোচিত হবে। একইসাথে উক্ত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী হস্তশিল্প ও রপ্তানীপণ্যসমূহ যথা- নকশি কাঁথা, জামদানী, সিরামিক সামগ্রী প্রদর্শন করা হবে। এ ছাড়া উক্ত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত মিশরীয় এবং বাংলাদেশী অতিথিদের ঐতিহ্যবাহী বাঙ্গালি খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।