বিইউএফটিতে সেমিনার ও প্রদর্শনী

অনলাইন ডেস্ক
২৪ জানুয়ারী ২০২৪, ২৩:২৭
শেয়ার :
বিইউএফটিতে সেমিনার ও প্রদর্শনী

বাংলাদেশের একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হলো তৈরি পোশাক খাত, যেটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের জিডিপিতে ১০.৩৫ শতাংশ অবদান রাখে, যে কারণে এই খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে গণ্য করা হয়। 

টেক্সটাইল এবং তৈরি পোশাক শিল্পে দক্ষ জনশক্তি তৈরির উদ্দ্যেশে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় (বিইউএফটি)-তে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাপারেল ম্যানুফ্যাকচারিং এন্ড টেকনোলজি। এই ডিপার্টমেন্ট দক্ষ মার্চেন্ডাইজার সহ তৈরি পোশাক শিল্পের অন্যান্য বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ খাতে জনশক্তি তৈরিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে, যার সুনাম ইতিমধ্যে এই উপমহাদেশের মধ্যে উদ্যোক্তা ও জনশক্তি তৈরির ক্ষেত্র হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার ডিপার্টমেন্ট অফ এএমটি-র ২২১ ও ২২২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়, ‘আরএমজি লিডারদের জন্য উদীয়মান ডিজিটাল যুগে স্মার্ট শিক্ষা’- সেমিনার এবং ‘কাটিং ফ্লোর লে-আউট এন্ড সিম আইডেন্টিফিকেশন’- প্রদর্শনী। পুরো অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন ডিপার্টমেন্ট অফ এএমটি’র সহকারী অধ্যাপক এ.টি.এম. মহিবুল্লাহ। 

সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই প্রদর্শনীর বিষয় ছিল ম্যানুয়াল এবং ভার্চুয়াল কাটিং ফ্লোর লে-আউট এবং বাংলাদেশে উৎপাদিত বিভিন্ন গার্মেন্টস এর উৎপাদনী প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বিবরণী (সুইং এবং সিম সিলেকশন)। যেখানে সার্থকভাবে মাদক বিরোধী প্রচারণাও চালানো হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে ডিজিটাল শিক্ষা বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেখানে উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিইউএফটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইঞ্জি. আইয়ুব নবী খান। 

প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)’র সচিব ড. ফেরদৌস জামান (তুহিন)। সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)’র পরিচালক ওমর ফারুক।

অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বিইউএফটির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক এস. এম. মাহফুজুর রহমান। অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন, বিইউএফটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। সমাপনী বক্তব্যে ছিলেন ডিপার্টমেন্ট অফ এএমটির ডিন, প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মোহাম্মদ রুবাইয়াত চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইঞ্জি. আইয়ুব নবী খান উল্লেখ করেন যে, শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা বাড়াতে, শিল্পের ক্রমবর্ধমান চাহিদাগুলি পূরণ ও শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের এবং ক্রিয়েটিভ শিক্ষার কোনও বিকল্প নেই। এছাড়াও তিনি পোশাক শিল্পের গবেষণার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র সচিব ড. ফেরদৌস জামান (তুহিন) তার বক্তব্যে বিইউএফটির ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘স্থায়ী ক্যাম্পাসের দিক থেকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে বিইউএফটি চতুর্থ অবস্থানে আছে।’ তিনি এখানে পোশাক শিল্পের বিশেষায়িত বিভাগ থাকার কারণে এটিকে বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার মেরুদণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

এছাড়া সম্মানিত অতিথি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-র পরিচালক ওমর ফারুক ডিজিটাল এডুকেশন এবং পোশাক শিল্পের গবেষণার উপরে গুরুত্ব আরোপ করেন। পাশাপাশি ডিপার্টমেন্ট অফ এএমটি-র মাদকবিরোধী প্রচারণার সাধুবাদ জানান।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপাচার্য, অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান তৈরি পোশাক শিল্পে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্যে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। তিনি করোনা মহামারীর সময় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম প্রদানে বিইউএফটির সর্বোচ্চ স্থান অধিকারের কথাও ইউজিসির সামনে তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি আরএমজি-খাতে স্মার্ট শিক্ষার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্যে আহ্বান জানান।

সেমিনারে বিশিষ্ট অতিথি, বিইউএফটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন সাবেক সংসদ সদস্য, ফ্যাশন এবং প্রযুক্তির নিরন্তর পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করেন। পাশাপাশি বিইউএফটির তৈরি পোশাক শিল্পে স্মার্ট টেক্সটাইল এন্ড অ্যাপারেল ডেভেলপমেন্টের রিসার্চ ইন্সটিটিউটের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করেন। এছাড়াও তিনি অনলাইনে ‘প্রাউড টু বি এন এএমটিয়ান’- ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন।

সেমিনারের শেষ পর্যায়ে, ডিপার্টমেন্ট অফ এএমটি-র ডিন প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মোহাম্মদ রুবাইয়াত চৌধুরী তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি উপস্থিত অতিথিবৃন্দদের এবং অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। 

পরবর্তীতে এএমটির বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ম্যানুয়াল ও ভার্চুয়াল প্রদর্শনী উদযাপিত হয়।

উক্ত সেমিনার ও প্রদর্শনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শুধু পোশাক শিল্পের প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই তুলে ধরা হয়নি, বরং মাদকবিরোধী প্রচারণাসহ সামাজিক সমস্যা সমাধানে বিশেষায়িত শিক্ষার ভূমিকার উপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি) দেশের তৈরি পোশাক শিল্প স্মার্ট করার লক্ষ্যে সামগ্রিক শিক্ষা প্রদান এবং বিশ্ব বাজারের চাহিদা পূরণ করতে পোশাক খাতের দক্ষ জনশক্তি ও উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে।