সিট থেকে রাবি ছাত্রকে নামিয়ে দিল ছাত্রলীগ নেতা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলে এক আবাসিক ছাত্রের বিছানাপত্র সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্র।
গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় ভুক্তভোগী ছাত্র রাতের খাবার খেতে হলের বাইরে যান। এ সময় তার রুম থেকে বেড ও জিনিসপত্র মেঝেতে ফেলে দিয়ে অন্য এক ছাত্রকে সিটে তুলে দেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহান হাসান।
ভুক্তভোগী ছাত্র রাকিবুল ইসলাম রকি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাসা দিনাজপুর জেলায়।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহান হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র এবং হবিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী বলেন, ‘আমি গতকাল রাত ৮টায় রাতের খাবার খেতে বাহিরে যাই। খাবার খেয়ে একটু দেড়ি করে রুমে এসে দেখি, আমার বেডপত্র মেঝেতে ফেলে দিয়ে অন্য এক ছেলেকে আমার সিটে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা সোহান। এই রুমে প্রভোস্ট আমাকে বরাদ্দ দিয়েছেন বলার পরেও তারা আমাকে থাকতে দিবে না বলে জানিয়েছে। এ বিষয়ে প্রভোস্টকে জানালে তিনি আমাকে বলেন, ‘‘আমার দায়িত্ব হলো সিট বরাদ্দ দেওয়া যা আমি দিয়েছি, এখন কিভাবে থাকবে, সেটা তুমি জানো”।’
ভুক্তভোগী আরও বলেন, ‘অসচ্ছল পরিবার থেকে আমার উঠে আসা। আর্থিক অবস্থার কারণে বিভাগে এক বছর ইয়ার গ্যাপ দিতে হয়েছে আমাকে। প্রভোস্টের কাছে ছয় মাস ঘুরে এই সিটটা আমি পেয়েছি। এখন যদি এই সিট না পাই, তাহলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা আমার জন্য খুবই কষ্টকর হবে। তাই আমার সিট আমাকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহান হাসানের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন:
ইবির ইসলামের ইতিহাস বিভাগে তালা!
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব বলেন, ‘বিষয়টি শোনামাত্রই ভুক্তভোগী ছাত্রকে আমি ডেকেছি। কি হয়েছে তার কাছ থেকে শুনব। যদি সে হলের কার্ডধারী ছাত্র হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাকে তার সিটে তুলে দেওয়া হবে। বিষয়টি দ্রুতই মীমাংসা করে দিব।’
শহীদ হবিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘ওই ঘটনাটির সমাধান হয়ে গেছে। ওই ছেলে ওই রুমেই থাকবে।’
নিজের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর তোলা অভিযোগের বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘সে যেভাবে বলেছে, আমি ওইভাবে বলিনি। প্রথমে ওই ছেলে আমাকে সিটের বিষয়ে বলার পরে আমি তাকে বলেছিলাম যে, ‘‘দেখো ওই সিটের বিষয়ে ছাত্রলীগের ছেলেরা আগেই বলেছে। তুমি কি ওখানে থাকতে পারবা?’’ সে বলল, ‘থাকতে পারব স্যার।” পরে যখন বলল নামিয়ে দিয়েছে, ‘‘তখন আমি বলেছি যে, বললে থাকতে পারবে, তাহলে পারলে না কেনো”।’