লন্ডনে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে জাতির পিতাকে গভীর শ্রদ্ধায় ও যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করল বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডন। গতকাল বুধবার লন্ডনে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে স্মারক অনুষ্ঠান ও প্রাঞ্জল আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ হাই কমিশন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আসা ব্রিটিশ বাংলাদেশি বিশিষ্ট অতিথিরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও হাই কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুর্স্পাঘ অর্পণ করেন হাইকমিশনার।
আলোচনা সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের নিহত সদস্য ও ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় পরিপূর্ণতা পায়। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ দীর্ঘ ২৪ বছরে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে পাকিস্তান থেকে মুক্ত করে বাঙালী জাতিকে উপহার দেন একটি স্বাধীন সার্বভৌম ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বাংলাদেশ।’
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার বাংলাদেশের স্বীকৃতি অর্জনসহ প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে Land Boundery Agreement স্বাক্ষর করেন এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুদৃঢ় করেন। দেশ স্বাধীনের মাত্র এক বছরের মধ্যে বিশ্বের ইতিহাসে অনবদ্য এক লিখিত সংবিধান দেশবাসীকে উপহার দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর আত্মমর্যাদাশীল দেশপ্রেম ও পররাষ্ট্রনীতিকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আজ এই ১০ই জানুয়ারি জাতীয় সংসদে শপথ গ্রহণ করেছেন। জাতির পিতার আদর্শে তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পূনর্ব্যক্ত করেছেন।’
হাই কমিশনার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাঙালিদের অসামান্য অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকালে ৮ ও ৯ই জানুয়ারি ১৯৭২’র লন্ডন সফরসহ সবসময় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন এবং সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন।
হাই কমিশনার তাসনীম নতুন প্রজন্মের ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসার এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অসাম্প্রদায়িক ধারা অক্ষুণ্ণ রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
আলোচনা সভায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্যস্থ বাংলাদেশি ব্রিটিশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব সুলতান মাহমুদ শরীফ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ লোকমান হোসেন, প্রথিতযশা সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আব্দুল আহাদ চৌধুরী।
আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে ঐতিহাসিক ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।