কানাডার মন্ট্রিয়লে ‘গণশুনানি’ ও ‘বিশেষ কনস্যুলার সেবা’র আয়োজন
জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩ উপলক্ষে কানাডার মন্ট্রিয়লে ‘গণশুনানি’ ও ‘বিশেষ কনস্যুলার সেবা’ দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার এই আয়োজন করে অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন।
গণশুনানিতে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান উপস্থিত থেকে কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী ভাই-বোনদের কনস্যুলার সেবা ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ এবং তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার কথা মন দিয়ে শুনেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানকে যথাযথ স্বীকৃতি দিতে এবং তাদের বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় অধিকতর সম্পৃক্ত করতে এ বছর প্রথমবারের মত প্রবাসী দিবস পালন করতে বিদেশ সকল বাংলাদেশ দূতাবাসসমুহকে নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে হাইকমিশনের বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবে প্রবাসী দিবসে মন্ট্রিয়ল শহরে বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য এই বিশেষ কনস্যুলার সেবার আয়োজন করা হয় এবং সেবার মান বৃদ্ধি করতে গণশুনানির মাধ্যমে তাঁদের মূল্যবান মতামত ও পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এল ১৪৯ কোটি ডলার
গণশুনানিতে মন্ট্রিয়লে কানাডিয়ান-বাংলাদেশিরা জানান যে দিন দিন শহরটিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে এবং তারা শহরটিতে একটি কনস্যুলেট অফিস খুলতে হাইকমিশনারের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করেন। শীঘ্রই তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মান্যবর হাইকমিশনার বরাবর একটি দরখাস্ত পেশ করবেন বলে জানান। এ সময় মান্যবর হাইকমিশনার মন্ট্রিয়লে কনস্যুলেট অফিস খোলার অনুরোধ যথাযথ প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করবেন বলে তাদের আশ্বাস দেন। উল্লেখ্য, মন্ট্রিয়লে বর্তমানে ৪০ হাজারেরও বেশি কানাডিয়ান-বাংলাদেশি বসবাস করছেন এবং শহরটিতে দিন দিন তাদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ ছাড়া উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা কনস্যুলার সেবা প্রাপ্তি আরও সহজতর করতে মান্যবর হাইকমিশনারকে অনুরোধ করেন। এ সময় মান্যবর হাইকমিশনার জানান যে, কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি ভাইবোনদের বিদ্যমান আইনি কাঠামোর আওতায় দ্রুততার সঙ্গে কনস্যুলার সেবা প্রদানে হাইকমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি কানাডিয়ান-বাংলাদেশিদের জন্য কনস্যুলার সেবা আরও সহজতর করতে বিদ্যমান আইন-কানুনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে আগামী বছর নতুন সরকার গঠিত হবার পরপরই সরকারের কাছে জোর সুপারিশ করবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মান্যবর হাইকমিশনার আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লালন করে সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে এবং কানাডার বিদ্যমান আইন-কানুন ও সামাজিক রীতিনীতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাবোধ রাখতে সকলকে অনুরোধ করেন। তিনি কানাডায় বসবাসরত বাংলাদেশি ভাই-বোনদের কাছে তাদের সততা, কাজ ও মেধার মাধ্যমে কানাডায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে অনুরোধ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের পরিহার করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে আহ্বান জানান। এ ছাড়া, তিনি প্রবাসী ভাই-বোনদের তাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেশে পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছে বৈধ পথে পাঠাতে বিশেষ অনুরোধ করেন।
মন্ট্রিয়লস্থ বাংলাদেশি প্রবাসীদের উপস্থাপনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে জাতীয় প্রবাসী দিবস ২০২৩-এর অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
