দুর্নীতিবাজ-অর্থপাচারকারীরা আমাদের সন্তানদের স্বপ্ন চুরি করছে: আদালত

আদালত প্রতিবেদক
২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১৫:৪৫
শেয়ার :
দুর্নীতিবাজ-অর্থপাচারকারীরা আমাদের সন্তানদের স্বপ্ন চুরি করছে: আদালত

অর্থপাচার মামলায় রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা এনামুল হক এনু এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়ার সাত বছরের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। একই সঙ্গে রায়ে আসামিদের ৫২ কোটি ৮৮ হাজার ৭৮৮ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। অর্থদণ্ড আনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।   

আজ মঙ্গলবার ঢাকার ৮ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. বদরুল আলম ভূঞা এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে অপর ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন শহীদুল হক, মো. রশিদুল হক ভুঁইয়া, মো. মেরাজুল হক শিপলু, জয় গোপাল সরকার, পাভেল রহমান ও ভুলু চন্দ্র দেব।

রায় ঘোষণার সময় এনু ও রুপনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়েছে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের উচিত তাদের (দুর্নীতিবাজ, অর্থপাচারকারী) আইনের আওতায় আনতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করা। কারণ দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীরা আমাদের কেবল সম্পদ চুরি করছে না, তারা আমাদের ভবিষ্যৎ চুরি করছে, আমাদের সন্তানদের স্বপ্ন চুরি করছে। এটা সত্য এদেশের মানুষ দুর্নীতিবাজদের ঘৃনা করে। তবে আমাদের উচিত তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করা।’

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এনু ও রুপনের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব-৩। অভিযানে এনুর বাসা থেকে ৮৮ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০ টাকা এবং ১ কোটি ২০ লাখ টাকা মূল্যমানের ২ কেজি ৯০৮.৯৫ গ্রাম ওজনের ১৯ প্রকার স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার হয়।

অন্যদিকে, রুপনের বসা থেকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা এবং ২ কেটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যমানের স্বর্ণালংকার উদ্ধার হয়। পরে ওই ঘটনার পর এনু ও রুপনের বিরুদ্ধে সূত্রাপুর, ওয়ারী এবং গেন্ডারিয়া থানায় একটি মানিলন্ডারিং, অবৈধ সম্পদ অর্জনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১২টি মামলা হয়।

এর মধ্যে ২০২০ সালের ৩১ অগাস্ট বংশাল থানায় সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম স্কোয়াডের পরিদর্শক মো. মেহেদী মাকসুদ ১১ জনকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে আটজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। মামলার বিচারকালে আদালত এ মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহন করেছেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল ওয়ারী থানার একটি অর্থপাচারের মামলায় এনু-রুপনসহ ১১ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেনের আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৪ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

দণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন জয় গোপাল সরকার, মেরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, রশিদুল হক ভূঁইয়া, সহিদুল হক ভূঁইয়া, পাভেল রহমান, তুহিন মুন্সি, আবুল কালাম আজাদ, নবীর হোসেন শিকদার ও সাইফুল ইসলাম।